অবসর সময় আনন্দময় করার ভালো একটি মাধ্যম হচ্ছে মুভি দেখা। ভালো একটি মুভি মূহুর্তেই আপনার মন ভালো করে দিতে পারে। তবে প্রথমেই বলে রাখি মুভি মানেই যদি আপনার কাছে সুপার একশ্যান মারপিট এবং লুতুপুতু প্রেম হয় তাহলে নিচের মুভিগুলো আপনার ভালো না ও লাগতে পারে। তবে আপনি যদি জীবন ঘনিষ্ঠ কাহিনী নির্ভর মুভি দেখতে পছন্দ করেন তাহলে নিচের সেরা মুভিগুলো আপনার জন্য।
৫. আবর্ত
একটি মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানির জি.এম থেকে ভি.পি হওয়ার দ্বন্দ্ব নিয়ে মুলত মুভির কাহিনীর শুরু। পাশাপাশি ক্যারিয়ার নিয়ে অতি ছুটে চলা জিবন – ব্যক্তিগত জিবন কে কিভাবে প্রভাব ফেলে তা দারুন ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক অরিন্দম শীল। জয়া আহসান, আবির,কৌশিক ও টোটা রায় চৌধুরীর নৈপুণ্য অভিনয়ে কাহিনী ক্রমেই সম্পর্কের আবর্তে জড়িয়ে যায়।
৪. চারুলতা ২০১১
অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেন আর্ট ফ্লিম ইন্ডাস্ট্রিতে অলেরেডি নিজেকে প্রমান করেছেন প্রাক্তন, রাজকাহিনী, রাতের রজনীগন্ধার মতো একের পর এক ভার্সেটাইল ক্যারেক্টারে অভিনয়ের মাধ্যমে, চারুলতা ২০১৯ মুভিতেও তার নামের যথার্থ ব্যবহারটি করেছেন। এছাড়াও অভিনয় করেছেন কৌশিক সেন এবং অর্জুন চক্রবর্তী। মুভিটি আমি শুধু পরক্রিয়ার গল্প বলে সংকীর্ণ না করে বরং বলতে পারি একজন কাজ প্রিয় ও বাস্তববাদী স্বামী ও একজন নিঃসঙ্গ স্ত্রী’র গল্প। রবীন্দনাথের “নষ্টনীড়” গল্পের নির্যাস থেকেই মুভিটি তৈরি তথা সতজিৎ রায় এর চারুলতার আধুনিক ভার্শন ও বলা যেতে পারে। অবশ্যই একাধিকবার দেখার মতো একটি মুভি এটি।
৩. বাকিটা ব্যক্তিগত
ভারতীয় জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত একটি সিনেমা, যদিও জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার আমার মুভি নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোন মানদন্ড নয়। তবে দর্শকদের তরুন পরিচালকের ভিন্ন অাঙ্গিকে গল্প বলার পেক্ষাপটের প্রেমে পড়তেই হবে। শুধুমাত্র ঋত্বিক চক্রবর্তীর অভিনয় দেখার জন্য হলেও এই মুভিটা দেখতে পারেন। তাছাড়া সোহাগী গ্রামের গল্প আপনাকে বাধ্য করবে পুরো মুভিটা দেখতে।
২. বুনোহাঁস
অভিনেতা দেব কে যারা বাণিজ্যিক মুভিতে একই চরিত্রে দেখতে দেখতে ক্লান্ত, এই মুভিতে দেব নিজেকে নতুন ভাবে ভেঙ্গে এবং ছাড়িয়ে গিয়েছেন । মুভিটি ভারতীয় হলেও গল্পের প্রয়োজনে শুটিং হয়েছে বাংলাদেশেও। খ্যাতিমান পরিচালক অনুরুদ্ধ রায় চৌধুরীর গল্প সাজানোর ভঙ্গি ও তীক্ষ্ণ অভিনয় অবশ্যই আপনাকে মুগ্ধ করবে।
১. নৌকাডুবি
রবীন্দনাথের “নৌকাডুবি” উপন্যাসের অবলম্বনে মুভিটি নির্মাণ করেছেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। উপন্যাস থেকে মুভি করা বরাবরই কঠিন কাজ। কেননা মানসিক অভিব্যক্তি লিখে প্রকাশ করা গেলেও মুভিতে চিত্রিত করাটা আরো বেশি কঠিন কাজ সাথে উপন্যাসের সাথে তুলনা বিষয় টি থাকেই। কিন্ত এই কাজটি চমৎকারভাবে সামলে নিয়েছেন পরিচালক ঋতুপর্ণা ঘোষ সাথে চারজন দক্ষ অভিনেতা ও অভিনেত্রী নিয়ে। সুচিত্রা সেনের দুই নাতনী রিয়া ও রায়মা সেন কে দেখতে পাবেন ভিন্ন ভাবে। সর্বোপরি, মানসিক দ্বন্দ্ব ও আবেগ মিশ্রিত কাহিনী নিয়ে নির্মিত মুভিটি নিরিবিলি দেখতে পারলে হেমলিনী,নলিলাক্ষ, কমলা ও রমেশ- চারটি চরিত্র ঈ সতন্ত্র ভাবে মুগ্ধ করবে এবং নিজেকে মিশিয়ে ফেলবেন চরিত্রের সাথে।
উপরের সেরা মুভির লিস্ট দেখে আপনি প্রশ্ন তুলতে পারেন; বেলাশেষে,প্রাক্তন, বিসর্জন, দশমী, রাজকাহিনী বা বাংলাদেশের মনপুরা, দারুচিনি দ্বিপ, স্বপ্নজাল ও অজ্ঞাতনামা এর মতো বিখ্যাত মুভি গুলো এই লিস্টে নেই কেন। তার উত্তর দুটি। প্রথমত সংখ্যার সীমাবদ্ধতা, দ্বিতীয়ত সেসব মুভিগুলো বহুল প্রচারিত। তো উপরের লিস্ট থেকে আপনার যেকোন অদেখা মুভি এক্ষুনই দেখে ফেলুন এবং নিরাপদে থাকুন।
লেখক: জোনায়েদ মামুন
লেখক ও সাংবাদিক, অপরাধ ডটকম