চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার টোরামুন্সিরহাটের আঞ্চলিক সড়কের দু’পাশ জুড়ে চলছে জমজমাট বালুর ব্যবসা। আর এই অবৈধ বালুর ব্যবসার খেসারত দিচ্ছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, পথচারী, যাত্রী ও যানবাহন চালকরা।
শুধু তাই নয়, ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ-তিনগুণ বালু ট্রাকে বহন করায় নানা স্থানে পাকা সড়ক ভেঙে যাচ্ছে। ব্যস্ত সড়ক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে বালুর ব্যবসা করার অনুমতি না থাকলেও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের চোখের সামনে প্রকাশ্যে চলছে এই ব্যবসা। দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে অবৈধ এই ব্যবসার পরিধি। ফলে একদিকে দুর্ভোগে পোহাচ্ছে পথচারীরা অন্যদিকে প্রতিনিয়তই ছোট-বড় দুর্ঘটনায় পড়ছে বিভিন্ন যানবাহন।
স্থানীয় অভিযোগের ভিত্তিতে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের টোরামুন্সিরহাটে সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টোরামুন্সির হাট আলিম মাদ্রাসার দুতলা ভবন আড়ালে পরে গেছে বালির ঢিপির কাছে। মাদ্রাসার ভবন এবং সমস্ত ক্লাস রুমগুলো মোটা বালুর আস্তরে ঢেকে গেছে। হারিয়ে গেছে শিক্ষা গ্রহণের পরিবেশ।
এই মাদ্রাসার পাশেই রয়েছে ছোট্ট একটি বাজার, একটি মসজিদ এবং একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসাসহ সড়কের দু’পাশ জুড়ে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় অনেক অবৈধ বালুর ব্যবসা। সড়কের পাশে কিংবা ব্যক্তিগত জমির ওপর এসব ব্যবসা গড়ে তোলা হলেও প্রশাসন কিংবা পরিবেশ অধিদফতর থেকে নেয়া হয়নি কোনো ধরনের অনুমতিপত্র। এ এলাকায় গড়ে উঠেছে অন্তত ১০টি বালু ব্যবসার কেন্দ্র। সড়কের পাশে বালু স্তূপ করে রাখায় সারাক্ষণই বাতাসে উড়ে বেড়াচ্ছে বালু। তাছাড়া সড়কের পাশে বালুর ব্যবসা করায় স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকেও। এতে করে সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রী ও যানবাহনের চালকদের চোখে মুখে ঢুকে পড়ে বালু। আর প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জানায়, সড়কের পাশে বালুর ব্যবসায় গড়ে তোলায় আমাদের মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বাতাসে বালু উড়ে আমাদের চোখে মুখে যায়। এতে করে আমাদের সর্দি-কাশিসহ নানা শ্বাসজনিত রোগে ভুগতে হয়। আমরা সড়কের পাশে অবৈধ এই বালু ব্যবসা বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। প্রশাসনের ভূমিকা না থাকায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে অবৈধ এই ব্যবসা।
অত্র এলাকার বালু ব্যবসায়ী নয়ন মজুমদার বলেন, বালুর ব্যবসা করায় কি সমস্যা হয়েছে? কেউ কি মারা গেছে? সবাই করে, আমিও করি।
চাঁদপুর জেলা পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বলেন, সড়কের পাশে উন্মুক্ত পরিবেশে বালু ব্যবসা করা যাবে না। ইতিমধ্যে এই ধরনের ব্যবসায়ীদের বালু ব্যবসা বন্ধে সতর্ক করা হয়েছে। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, সড়কের পাশে বালুর ব্যবসা করা ঝুঁকিপূর্ণসহ পরিবেশ ও সাধারণ লোকজনের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। আমরা আগেও বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছি। আমরা এই অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।