চীন বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতির দেশ এবং প্রযুক্তিতে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তাতেই করোনা মহামারী নিয়ন্ত্রণ করতে চীনের লেগেছে তিনমাস। ভঙ্গুর স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং বিশৃঙ্খল জনগন নিয়ে করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে বাংলাদেশের কতদিন লাগতে পারে…?
আমার তো মনে হচ্ছে- ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হলে করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করাই সম্ভব হবে না। কমপক্ষে ৩-৪মাস সময় লাগবে শুধুমাত্র পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে।
প্রবাসীরা সারাবছর যা কামায়, সবটাই পরিবারের লোকজন লুটপাট করে খায়। ভোগ-বিলাসিতা করে টাকা উড়ায়। পরিবারের চাহিদা পূরণ করেও শান্তি এবং স্বীকৃতি পায় না প্রবাসীরা। করোনার কারণে প্রবাসীদের আয় বন্ধ। এক মাস চলার সামর্থ্য নাই অনেক প্রবাসী পরিবারের। বিশাল ঘর আছে, বিলাসবহুল পন্য আছে; কিন্তু ব্যাংকে কিছু নাই।
দেশের প্রায় ৭০% ব্যাংক একাউন্টে নাই এক সপ্তাহ বাজার করার টাকা। প্রান্তিক খুচরো ব্যবসায়ীরা সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে এখন। বড় ব্যাবসায়ীরা খরচ কমাতে কর্মচারী ছাটাই করে দিয়েছে, বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠাচ্ছে অথবা বেতন বন্ধ করে দিয়েছে। যারা এতদিন স্বাবলম্বী ছিল কিন্তু সঞ্চয় করে নাই, তারা এখন পড়েছে বিপদে।
চীন, আমেরিকা ও ইউরোপে খাবারের অভাবে কাউকে মরতে হয় নাই। কিন্তু অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও অপব্যবহারের কারণে আমাদের দেশে না খেয়ে মরা শুরু হয়ে গেছে। সরকার ৫৭হাজার মেট্রিক টন চাল দেয়ার পরেও ২জন ক্ষুধায় আত্মহত্যা করেছে। কারণ ত্রাণের সঠিক বণ্টন হচ্ছে না। ত্রাণ পাচ্ছে নেতাদের আস্থাভাজন কিংবা আত্মীয়স্বজনরা। ২০কেজির পরিবর্তে পাচ্ছে ৫কেজি। অনেকে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে যাচ্ছে, ত্রাণ পাচ্ছে না।
করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী ৬০কোটি মানুষ বেকার হয়ে পড়বে। আমেরিকায় রেকর্ড সংখ্যক বেকার ভাতার আবেদন জমা পড়েছে। আমাদের দেশে কোম্পানীগুলোই বেকার বাড়িয়ে দিচ্ছে কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করে। এছাড়াও ক্ষুদ্রব্যবসায়ী ও চাকরিজীবিরা এখন বেকার।
সরকার ঘোষিত প্রণোদনা দেশের অর্থনীতি ও কৃষিকে সচল রাখবে এবং দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক মন্দা থেকে দেশকে বাঁচাবে ঠিকই। কিন্তু বেকার ও ক্ষুদ্রব্যবসায়ীদের নিঃস্ব করে দিবে লকডাউন। বড় বড় কোম্পানী প্রণোদনার অর্থ নিয়ে যাবে; কিন্তু কর্মী ছাটাই, বেতন বন্ধ করা এবং বাধ্যতামূলক ছুটি দিয়ে খরচও কমাবে। অপরদিকে মধ্যবিত্ত শ্রেণী ত্রাণ পাবে না, প্রণোদনাও পাবে না। প্রকৃতপক্ষে যা দরকার ছিল-
সবার হাতে টাকা থাকলে, সবার ক্রয়ক্ষমতা থাকবে। কেউ না খেয়ে থাকবে না। গরিবরা সবাই ত্রাণ পেলে, কেউ না খেয়ে মরবে না। যারা এখন নিঃস্ব, লক-ডাউন উঠে গেলে তারাও আবার স্বাবলম্বী হয়ে যাবে। তারা পরিশ্রমী। তাই এখন তাদের অর্থনৈতিক সাপোর্ট দেয়া প্রয়োজন।
ব্যক্তি হিসেবে আমাদের যা করণীয়-
সর্বোপরি সবাই ভাল থাকুন। উপরওয়ালার সাহায্য প্রার্থনা করুন।
নুর আলম সিদ্দিকী
লেখক ও সাংবাদিক, অপরাধ ডটকম