আমি (৩৬) ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকরী করি। কয়েকদিন যাবত আমার শরীরের জ্বর কোন ভাবেই যাচ্ছিল না, আমার শ্বাসকষ্টও ছিল। কয়েকদিন যাবত জ্বর ও শ্বাসকষ্ট থাকায় গত সপ্তাহে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আমি ও আমার স্ত্রী, সন্তানের করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেই। আমার শারীরিক সমস্যায় অনুভুত হওয়ায় আমি ফরিদপুর মেডিকেলে বৃহস্পতিবার সকালেই আইসোলিউশনে ভর্তি হই। স্ত্রী ও সন্তান বাড়ীতেই ছিলো।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জানতে পারি আমাদের করোনা পজেটিভ এসেছে। যখন জানতে পারলাম আমি করোনা আক্রান্ত তখন বুঝতে পারলাম আমাকে এখানে কিছুদিন থাকতে হবে চিকিৎসার জন্য। তখনই কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয়ের চেষ্টা করি কিন্তু পারি নাই। করোনায় আক্রান্ত বলে আমার কাছে থাকা টাকা কেউ ধরতে রাজি হয়নি। হ্যাঁ কিছুটা কষ্টতো পেয়েছি, কিন্তু করোনার প্রেক্ষাপটে আসলে কিছু করার নেই। কারো প্রতি কোন ক্ষোভও নেই।
তবে কৃতজ্ঞ বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার হেদায়েতুল ইসলাম স্যারের প্রতি। টাকা থাকার পরেও যখন দৈনন্দিন ব্যবহৃত ফাক্স, মগ, ওষুধ, পানি গরম করা জগ এখান থেকে কাউকে দিয়ে ক্রয় করতে পারছিলাম না। তাকে বিষয়টি জানানোর পরই আমার স্ত্রীর কাছে সেগুলো কিনে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
করোনায় পজেটিভ রিপোর্ট আসার পর সমস্যায় কিছু সমস্যায় সাধুখালীর একই পরিবারে ৩ জন করোনায় আক্রান্ত হওয়া পরিবার প্রধান জানাচ্ছিলেন তার প্রথম অভিজ্ঞতা। বর্তমানে তিনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, একজন মানুষ হিসেবে আমাদের সবার উচিত মানবিক হওয়া, সবার সাথে মানবিক আচরণ করা। ওই পরিবারের প্রধান শ্বাসকষ্ট নিয়ে ফরিদপুর হাসপাতালে ভর্তি হন। রিপোর্টে দেখা যায় সে ও তার স্ত্রী, সন্তান করোনা আক্রান্ত। গ্রামের বাড়িতে থাকা স্ত্রী ও সন্তানকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণের সময় ফরিদপুর থেকে তিনি ফোন করে বলেন, এখানে কেউ আমার টাকা ধরছে না, কিন্তু দৈনন্দিন ব্যবহৃত কিছু সামগ্রী খুব প্রয়োজন। ওষুধ ও তার প্রয়োজনীয় সামগ্রী বাজার থেকে ক্রয় করে তার স্ত্রী ও সন্তানের বহন করা গাড়ীতে পাঠানো হয়েছে।আসলে করোনা এমন কোন রোগ না যে এর থেকে কেউ সুস্থ্য হয় না। ইতোপূর্বে জঙ্গল গ্রামের আক্রান্ত ছেলেটিও সুস্থ্য হয়ে বাড়ীতে এসেছে। আশা করি সে, তার স্ত্রী ও সন্তান সুস্থ্য হয়ে দ্রুত বাড়ীতে ফিরে আসবেন।