পুরো পৃথিবীর মানুষ যখন কভিড-১৯ ভাইরাসের কাছে লন্ডভন্ড হয়ে গৃহবন্দী, তখন নাসা এবং ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সী একদল বিজ্ঞানী বলছে, স্যাটালাইট ইমেজে আকাশে co2 দূষণ এর পরিমাণ এর আগে কখনো এত কম উপলদ্ধি হয় নি।
ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট এসোসিয়েশন (IATA) ধারনা করছে, গত বছর থেকে এবার বিমানের ৩০০০০ মিলিয়ন ফ্লাইট কম হবে।যা বৈশিক তাপমাত্রা ও বায়ু দুষন রোধে উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রাখবে।
তাছাড়া জোরপূর্বক হলেও এই মহামারী আমাদের শিখিয়ে দিল ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স বা ফরেন ট্যুর না করেও কিভাবে ইম্পোরটেন্ট মিটিং সেরে নেওয়া যায়। শুধু বায়ু দূষণই না,গাড়ি চলাচল বন্ধ হওয়ায় শব্দদূষন ও তেল এর চাহিদা হ্রাস পেয়েছে ব্যাপক হারে। তা বর্তমানে ঢাকার অবস্থা দেখলেই আন্দাজ করতে পারি।
এদিকে সমুদ্রও ফিরে পেয়েছে তার প্রানচঞ্চলতা। ফেসবুকে সম্প্রতি ভাইরাল হচ্ছে, আমাদের কক্সবাজারে ডলফিন ভেসে বেড়ানোর দৃশ্য। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্র সৈকত সহ পৃথিবীর অনেক সমুদ্র পর্যটন কেন্দ্রই সাময়িকভাবে বন্ধ থাকায় সাময়িক ভাবে রক্ষা পাচ্ছে দুষন ও আবর্জনা থেকে।
অন্যদিক, অতিব ছুটে চলা মানুষগুলো ফিরে পেয়েছে পারিবারিক সময়। সবচেয়ে ভালোদিক, করণা আমাদের মনে করিয়ে দিল-মানুষ হিসেবে আমাদের সিমাবদ্ধতা। পুঁজিবাদী মানুষগুলো বুঝতে শিখেছে ক্ষেত্রবিশেষে অর্থ ও ক্ষমতাও যে প্রকৃতির কাছে বড্ড অসহায়। সর্বশেষ তথ্যনুযায়ী, ইউ.কে এর প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যসচিব ও এই মহামারী থেকে রক্ষা পায় নি।
সর্বোপরি, আমরা মানুষেরা আমাদের আত্ম-স্বার্থের কথা চিন্তা করে, নির্বিচারে ভবিষ্যৎ পৃথিবীকে যেভাবে খুব দ্রুত হত্যা করে যাচ্ছি, তার প্রতিফলন ও বোধহয় টের পাচ্ছি। অর্থনীতিতে করণা ভাইরাস এর ফলে ব্যবসায়ীক ক্ষতি অর্থে পরিমাণযোগ্য কিন্ত প্রতি বছর পরিবেশে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ব্যাড ইফেক্ট অর্থে অপরিমেয়। কাজেই, প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও পৃথিবীতে আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে প্রত্যেকেরই জোরালো ভুমিকা রাখা উচিত।
লেখক: জোনায়েদ মামুন
লেখক ও সাংবাদিক, অপরাধ ডটকম