করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে দেশের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিকট অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে স্বাভাবিক থাকলেও স্বস্তিতে নেই আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। বরং বিরামহীনভাবে চলছেন তাদের কর্মযজ্ঞ । দেশের এমন সংকটময় মুহূর্তে গতানুগতিক আইন শৃংখলা রক্ষার পরিবর্তে তারা সামাজিক দূরত্ব ও কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতসহ মানবিক নানান কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত রেখেছেন নিজেদেরকে।
আপনি ঘরে থাকুন, সচেতন থাকুন, নিজে বাঁচুন-পরিবার বাঁচান, দেশ বাঁচান। মাইক হাতে নিয়ে শহর থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চলে গিয়ে এভাবেই মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা৷
সীমাবদ্ধতা থাকা স্বত্ত্বেও করোনা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন পুলিশ বাহিনী। পরিস্থিতি এবং পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনায় হয়তো সব জায়গায় পুলিশের পক্ষে সর্বোচ্চ সেবা প্রদান করা সম্ভব নয়। তবে ইচ্ছা এবং সামর্থের কমতি রাখছেন না বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী৷
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে ২০ কোটি টাকা আর্থিক অনুদান দিয়েছে পুলিশ। ২০ কোটি টাকার অনুদানের অর্থের মধ্যে রয়েছে পুলিশ কনস্টেবল থেকে আইজিপি পর্যন্ত পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের একদিনের বেতন, বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন, পুলিশ অফিসার্স মেস ও পুলিশ কল্যাণ তহবিলের অর্থ।
আজ নিজের জীবন কিংবা পরিবারের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমরা যখন গৃহবন্ধি (হোম কোয়ারান্টাইনে) তখন এই সব পুলিশ সদস্যরা রাত-দিন রাস্তায়-রাস্তায় গিয়ে আইনশৃংখলা রক্ষার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সাথে মিশে দুই হাত উজাড় করে সহায়তার পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। যা বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দল জনপ্রতিনিদিরাও পারেনি। দেশের এই পরিস্থিতিতে যারা জীবনের এতো বড় ঝুঁকি নিয়ে দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন সারা বাংলাদেশ জুড়ে আজ তারাই সব চেয়ে অবহেলিত অবস্থায় আছেন। বাংলাদেশের যে কোন দুর্যোগের সময় আমাদের দেশের পুলিশ বাহিনী সব সময় সবার আগে এগিয়ে গিয়ে হাল ধরে এবং দেশ বিদেশে প্রশংসা কুড়িয়ে নেয়৷ আমাদের পুলিশ বাহিনী শুধু বাংলাদেশে নয় বহির্বিশ্বেও জীবন বাজি রেখে কাজ করে চলেন ও বাংলাদেশের জন্য বয়ে আনেন সুনাম। আবার এই পুলিশ বাহিনী পরিস্থিতির কারনে অনেক সময় শুনতে গাল মন্দ।
করোনা ভাইরাস ঝুঁকি নিয়েই ব্যস্ত দিন-রাত পার করছেন তারা। আইন শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত এবং কোয়ারিন্টাইন নিশ্চিত করতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করতে হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় জীবানুনাশক ছিটানো, ঘরের অবস্থান করা বাসিন্দাদের ঘরে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার পৌঁছে দেওয়া, হতদরিদ্রদের কাছে বিনামূল্যে খাবার পৌঁছে দেওয়া, অসুস্থ ব্যক্তিদের হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া এবং চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের কর্মস্থলে আসা যাওয়ার জন্য পরিবহন সুবিধা দেওয়াসহ নানান মানবিক কাজ করছে পুলিশ।
বর্তমান পরিস্থিতিতে সবচেয়ে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন দেশের মানুষের জন্য তখন তাদের হয়ে বলার কেউ নেই। বর্তমানে কোন পাড়া মহল্লায় বা বাসা বাড়ি থেকে খবর আসে যে এই বাসা বাড়ি বা পাড়া মহল্লায় করোনা ভাইরাসের লক্ষ্যণ এমন রুগী আছে তখন আর কেউ এগিয়ে আসে না তখন এই পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাই এগিয়ে গিয়ে মৃত্যুর ভয় না করে তাদের কাছে ছুটে চলে যায় রুগীকে বাসা থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত নিয়ে যান বাঁচানোর জন্য এমন কি কোন রুগী মারা গেলে বর্তমানে কেউ কাছে আসেনা তখন এই পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাই জীবন বাজি রেখে মৃত ব্যক্তির দাফন কাফন সহ জানাজা করে কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত করেন। কিন্তু তারা নিজেদের কথা একবার ও ভাবেন না যে উনারা ও মানুষ তাদের ও হতে পারে এই মরণ ব্যাধি রোগ যারা নিজের জীবনের পরওয়া না করে দিন রাত আনাচে কাছে প্রত্যত্ন অঞ্চলে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খুজ খবর করে কাঁধে বয়ে নিয়ে খাবার পৌঁছাতে ব্যস্ত আজ তারাই বড় অবহেলিত।
বাংলাদেশের আঠারো কোটি মানুষের পাশে যখন অতন্দ্র প্রহরী হয়ে তারা দিন রাত এক করে কাজ করে যাচ্ছেন তখন তাদের সুরক্ষার বিষয়টা সবার আগে নেওয়া উচিৎ ছিল।
এখনো আমরা কেউ জানিনা এই মহামারী পরিস্থিতি থেকে কবে রক্ষা পাবো এখনো অনেক সময় আছে এই অতন্দ্র প্রহরী দেশ সেবকদের পিপিই সহ সব ধরনের সুরক্ষার ব্যবস্তা করা হোক।