পটুয়াখালী শহরের বড় চৌরাস্তা সংলগ্ন কুট্টি সরকারের তৈলের পাম্পের পূর্ব পাশে অবস্থিত শরীফ হোসেন সোনাবানু স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় আইরিন আক্তার মুন্নি (২১) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
পটুয়াখালী বড় চৌরাস্তার মৃধা বাড়ির নুরুল মৃধার মেয়ে আইরিন আক্তার মুন্নি এবং আলী আহমেদ এর স্ত্রী।
৪ মার্চ বুধবার বিকাল ৩:৩০ মিনিটে আইরিন আক্তার মুন্নি কে পটুয়াখালী শহরের বড় চৌরাস্তার শরীফ হোসেন সোনাবানু স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আইরিনকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় সেই পরীক্ষায়-নিরীক্ষা তিনি সম্পূর্ণরূপে সমস্ত রিপোর্টে ভালো ছিলেন।
কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত ৭:৪৫ মিনিটের সময় আইরিনের কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা তোয়াক্কা না করেই তাকে অপারেশন থিয়েটারে এপান্টিস অপারেশনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে ডাঃনাসির উদ্দিন আইরিনের শরীরে অ্যানেসথেসিয়া নামক ইনজেকশন পুশ করে।
ইনজেকশন দেওয়ার পরেই আইরিন জোরে জোরে চিৎকার চেঁচামেচি দিয়ে বলে আমি অপারেশন করবো না আমাকে বাঁচাও! অতি দ্রুত রোগীর অবনতি হতে থাকে,তার চিৎকার চেঁচামেচি শুনে আইরিনের মা দ্রুত অপারেশন থিয়েটার রুমে প্রবেশ করে।
মৃত আইরিনের মা জানান, ওটি থেকে দ্রুত চিকিৎসক বের হয়ে জানায়, রোগীর অপারেশন হয়নি। অবস্থা ভালো না আপনারা বরিশাল নেবার ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। এরপর এ্যাম্বুলেন্স হোসেন সোনাবানু স্পেশালাইজড হাসপাতালের সামনে আনলেও চিকিৎসকরা সময়ক্ষেপন শুরু করে। পরে আইরিনের জ্ঞান না ফেরায় তারা অক্সিজেনসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি শরীরে লাগিয়ে বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করে পুরো ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা করে।
রাত সাড়ে ১০ টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, আমার ২ বছরের নাতনী রয়েছে। আজ মেয়েকে হারিয়ে আমরা নি:স্ব। মেয়েটা এতিম হয়ে গেছে। আমি মেয়ে হত্যার বিচার চাই। দোষী চিকিৎসকের ফাঁসি চাই।
এবিষয়ে চিকিৎসকের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: এটিএম নাসির উদ্দীন সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, চিকিৎসায় কোন ধরনের ত্রুটি থাকলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কর্তৃপক্ষ।
পটুয়াখালী সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো:মেহেদি হাসান ও এস আই মোঃ জিয়াউর রহমান জানান, লাশের সুরাতহাল করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে স্থানীয় লোকজন জানান, রাতভর মীমাংসার জন্য হস্তা হস্তীর পরে ৬ লক্ষ টাকায় আইরিনের মৃতদেহের মীমাংসা হয়।
স্থানীয় লোকজন আরও বলেন, আইরিনের কি জীবনের মূল্য ৬ লক্ষ টাকা এভাবে আর কত আইরিনের জীবন দিতে হবে চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায়।
ক্ষিপ্ত এলাকাবাসী ,এভাবে তো টাকা দিয়ে জীবন তো কেনাই যায়।
টাকা দিয়ে মীমাংসা হলে জীবনের কোন মূল্য নেই, অপরাধী এভাবেই ছাড় পেয়ে যাবে।ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় মানুষ মারা যাবে টাকা দিয়ে মীমাংসা হবে এটাই আমাদের সভ্যতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অন্যায় যে করবে অন্যায়ের প্রতিবাদ হবেই আমরা এলাকাবাসী এই ডাক্তারের ফাঁসি চাই! বিচার চাই! যাতে করে এভাবে আর আইরিনের মতো কারো কোনদিন জীবন দিতে না হয়।