সাতক্ষীরায় করোনাভাইরাসে প্রথম আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মী মাহমুদুর রহমান সুমন এখন সুস্থ। পরপর দুটি রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় তাকে করোনামুক্ত ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্যবিভাগ।
একইসঙ্গে শহরের উত্তর কাটিয়াস্থ বাসাটির লকডাউন প্রত্যাহার করে নিয়েছে প্রশাসন। শুক্রবার বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান করোনাজয়ী সুমনকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
এ ছাড়া জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল ও সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন সাফায়াত ওই স্বাস্থ্যকর্মীর বাসায় যান। মাহমুদুর রহমান সুমন যশোর জেলার শার্শা উপজেলার মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট হিসেবে দায়িত্বরত। সাতক্ষীরা শহরের উত্তর কাটিয়া এলাকায় পরিবার নিয়ে একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন তিনি।
২৬ এপ্রিল তার শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। এরপর উত্তর কাটিয়া এলাকার বাসাটি লকডাউন ঘোষণা করে প্রশাসন। একইসঙ্গে সুমনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। মাহমুদুর রহমান সুমন বলেন, ‘নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়েই আমি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছি। কোয়ারেন্টিনে অনেকটা জেলখানার মতো বন্দি জীবন কেটেছে।
ঘরে একা থাকা, পরিবারের কেউ পাশে না আসা, দূর থেকে খাবার দেওয়া… সব মিলিয়ে মনে হয়েছে আমি জেলখানায় রয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম দিকে ভয় হতো, কী হবে আমার। তবে ধীরে ধীরে অভ্যাস হয়ে যায়। পরিবারের কেউ পাশে আসতে পারত না। আমিও আসতে নিষেধ করতাম।
বাইরে যেতে পারিনি বল অনেক খারাপ লেগেছে। তবে আজ (শুক্রবার) আমাকে করোনামুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। মনে হচ্ছে, জেলখানা থেকে মুক্তি পেয়েছি। স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই তারা সার্বক্ষণিক আমার খোঁজ খবর রেখেছেন।’ সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সাতক্ষীরার প্রথম করোনা আক্রান্ত সুমন এখন পুরোপুরি করোনা মুক্ত। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও উপহার সামগ্রী দিয়ে অভিনন্দিত করা হয়েছে।
তার বাড়ির লকডাউন প্রত্যাহার করা হয়েছে। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন সাফায়াত বলেন, ‘২৬ এপ্রিল কোভিড-১৯ পজেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার ১৪ দিন পর আমরা আবার সুমনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠাই। রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এরপর আবারও নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়; সে রিপোর্টও নেগেটিভ এসেছে। পরপর দুটি রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় আজ (শুক্রবার) সকালে স্বাস্থ্যকর্মী সুমনকে করোনামুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ।